Monday, August 26, 2019

রসায়ন ছাত্রের প্রেমপত্র!


প্রিয় অ্যাকোয়া রেজিয়া, 
তুই কি জানতি তোকে প্রথম দেখাতেই মনের ইলেকট্রনগুলো তিব্র বেগে ছোটাছুটি করছিল বিক্রিয়া ঘটানোর অভিপ্রায়ে।
দেহের প্রতিটা অণু পরমাণু চাইছিল তাদের অষ্টক পূরণ হোক।
কিন্তু তুই যে নিস্ক্রিয় গ্যাসের ভূমিকা পালন করিছিলি।
জানিস তোর সাথে জোরপূর্বক শক্তিশালী আয়নিক বন্ধন ঘটানোর ইচ্ছা আমার কোনো দিনই ছিলনা, আমি কেবল ডাইপোল হয়ে তোর সাথে সাম্যবস্থান করতে চাই।
সমযোজী বন্ধন তৈরি করে তোর সাথে শেয়ার করতে চাই আমার যত সুখ- দুঃখ- ভালোবাসা।
তুই আমার কাছে ক্যালিফোর্নিয়ামের চেয়ে দামী, ক্লোরিনের চেয়ে অধিক আসক্তি তোর প্রতি।
তোর ভালোবাসার অরবিটে আমি ঘুরতে ঘুরতে বিলীন হয়ে যেতেও রাজি।
তুই রাজি থাকলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মতো ভালোবাসার প্রদীপ জ্বালিয়ে নিজেই পুড়ে যাবো।
বাতাসে পোড়া গন্ধ পেয়ে হাইড্রোকার্বনের কথা ভাবিনা, ঐটা হবে আমার ভন্মাদেশের সৌরভ।
তোর আর আমার ভালোবাসার ফিউশন ঘটিয়ে পুরো পৃথিবীকে পাল্টে দিতে পারি।
নিউক্লিয়ার বোমার চেয়েও শক্তিশালী হবে আমাদের ভালোবাসা।
ঐ পাড়ার 'সীসা' মাস্তান ক্যাথরেট যৌগ হয়ে প্রেমের ফাঁদে তোকে আবদ্ধ করে রাখতে চায়।
ফসফরাসের চেয়েও বহুরূপী আর গ্রাফাইটের মতো পিচ্ছিল ছেলেটা সুযোগ বুঝে সন্নিবেশ বন্ধন ঘটাতে চায়।
জেনে রাখ ঐ মাস্তানটা কার্বন মনোঅক্সাইডের মতো নীরব ঘাতক আর সায়ানাইডের চেয়েও বিশাক্ত।
বোকাটা জানেনা আমাদের সিগমা বন্ধন কতটা মজবুত ও শক্তিশালী।
হীরকের বন্ধন আমাদের বন্ধনের কাছে নস্যি। চাইলেই সংকর পোলাটার দূর্বল ভ্যানডার ওয়াল আকর্ষন ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে পারি।
আমার গলনাঙ্ক-স্ফুটনাঙ্ক সম্পর্কে এজবুকটার কোনো ধারনাই নেই।
বাদ দাও অপধাতুটার কথা,
আমরা বরং আমাদের প্রেম বন্ধন একটার উপর আরেকটা সাজিয়ে ফ্লোরিনের চেয়েও বিশাল প্রেমের নিলয় সাজাই।
চলনা হেসের সূত্রকে সঠিক প্রমাণ করে ভালোবাসার পলিং বিক্রিয়া ঘটাই।
দেখে নিস তোর আর আমার প্রেমের কেমিস্ট্রি বিশ সালের উচ্চ মাধ্যমিক রসায়নের চেয়ে হাজার গুন বিস্তৃত, সাবলিল ও রোমান্টিক হবে।
তুই জাস্ট হাইড্রোজেন হয়ে হাত দুটো বাড়িয়ে দে, আমি ক্লোরিন হয়ে হাজার ওয়াটের আলো নিয়ে বসে আছি।
বিস্ফোরন হবে ভালোবাসার বিস্ফোরন।
ইতি
প্রোটন।


আরও একটি রসায়ন যুক্ত প্রেমপত্র!
প্রিয় মৌমিতা,
পত্রের প্রথমে এক বোতল সালফিউরিক এসিডের মত জ্বালাময়ী শুভেচ্ছা রইলো । প্রিয় আমি তোমাকে ডায়মন্ডের মত ভালবাসি।
আমার ভালোবাসা E=mc2 এর মতো চিরন্তন সত্য। তোমার প্রতি আমার এই ভালবাসা স্প্রিং নিক্তির মাধ্যমেও পরিমাপ করা যম্ভব নয়। প্রথম যেদিন তোমাকে দেখি সেদিন থেকেই আমার হৃদয়ের ট্রান্সফরমার তোমার হৃদয়ের Ac তড়িৎ প্রবাহের জন্য অপেক্ষা করে আছে । তোমাকে একদিন না দেখলে আমার হৃদয় লিফ্ট পাম্পের মত ওঠা নামা করে । বন্ধ হয়ে যায় মানব গিয়ার চাকা । যখন তোমাকে দেখি তখন নিজেকে হিলিয়ামের মত হালকা মনে হয়। প্রিয় আমার মনের পিকচার টিউবে শুধু তোমার ছবি ভেসে ওঠে । ওগো আমার আইসক্রিম, ওগো আমার সোডিয়াম কার্বোনেট, তুমি কি আমার মনের হাইড্রোকার্বনের বুদবুদ এর আওয়াজ শুনতে পাও না?
তুমি কি আমার নাইট্রোজেন মিথাইল এর মতো ভালোবাসা বুঝতে পারো না?
তবে কেনো এমন নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মত আচরণ করো? ওগো আমার অক্সিজেন সিলিন্ডার, কার্বন-ডাই-অক্সাইডে ভরা এই
পৃথিবীতে তোমার বিশুদ্ধ অক্সিজেন দিয়ে আমাকে বাঁচাও। এসো আমরা দুজন আমাদের হৃদয়ের জারণ বিজারণ ঘটিয়ে সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হই । আমাদের প্রেমের ট্রানজিস্টর ও সিলিকন চিপ কোনো দিনও নষ্ট হতে দেবো না । ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আমাদের প্রেমে যদি মরিচা পড়ে তবে নতুন করে আমরা গ্যালভানাইজিং এর প্রলেপ দিয়ে আমাদের প্রেমকে চাকচিক্যময় করবো ।
ইতি,
তোমার ---।
(সংগৃহীত)

নান্দনিকতার বিমুগ্ধতায় | Art of Life